- পিয়াংকী
বৃক্ষ এবং মহাকাব্য
আমি অর্জুনকে দেখিনি কোনকালে, পুরাণ পড়ে তাকে বুঝে নেবারও আগ্রহ ছিল না ,অথচ অর্জুনগাছ দেখেছি নিয়মিত ।ওর ফুলফল পাতা ছাল সবকিছু অবলীলায় ব্যবহারও করেছি।কিন্তু একটা কিশোর বয়সী ছেলেকে দেখলেই কেঁপে উঠেছে বুক।সে অর্জুন গাছের ছাল কুপিয়ে তোলে মাঝরাত হলেই।তার নিকট কোন আত্মীয় রোজ নিয়ম করেঠান্ডা জলে ভিজিয়ে রাখে সেই ছাল।ভোরে উঠে বাসীমুখে সে ওই কালচে জলটুকু ঢকঢক করে খায় আর খাতার সাদা পৃষ্ঠায় লিখে রাখে যাবতীয় অসুখ আর অসুর।
এই দৃশ্য পুরনো হতে না হতেই একদিন গনগনে দুপুরে,সময়টা কেমন হবে, ধরে নেওয়া যাক বারোটা পার হয়েছে সবে,সূর্য ডিগ্রী বিশেক হেলেছে, রে রে করে তেড়ে এল এক চওড়া বুকের মানুষ। তাকে দেখে থ হয়ে বসে রইল সভ্যতা। পুকুরে কিলবিলিয়ে উঠল মাছ।উথলে উঠল দুধ। তুলসীতলায় প্রদীপ জ্বালিয়ে রেখে আমি চলে গেলাম চাল বাছতে। সেই সুপুরুষ চোখের দিকে তাকিয়ে রইলেন কিছুক্ষণ। যোগদান করলাম না। অর্জুন গাছের নীচে নদী বয়ে গেল,ভেসে গেল কত জিজ্ঞাসা কত ভাষা আর কত কতকুঠার কিশোর বয়সী ছেলেটা একদিন আচমকা আলো হল।তার কাঁধে এসে বসল প্রজাপতি, গায়ে তখন শিকড় গজিয়েছে। হাতের প্রতিটি রেখায় বয়ে গেছে উত্তাল ঢেউ। বুকের পাটাতনে জমিয়ে রাখা অজস্র রঙিন পাথর।
একঘর মানুষেরই সামনে সে তীব্রভাবেহ্যাঁচকা টান দিল বুকের কাছে। মৎস্যচক্ষুগ্রাস করে নিল অন্যান্য অনুষঙ্গ। হৈ হৈ করে বৃষ্টি এল, জলস্নাত হল অর্জুন গাছের ঝাপড়ানো কান্ড
কোনো এক মফস্বলি মেয়ে, বালিকা বিদ্যালয়ের দোতলা বারান্দার সামনে দাঁড়িয়ে সেই পোড়াজল খাওয়া কিশোরকেই তার প্রথম এবং একমাত্র প্রেমিক বলে চেঁচিয়ে উঠল যখন তখন তার গায়ে বেড়ে উঠছে অর্জুন নামের বৃক্ষপুরাণ...